অভাগীর স্বর্গ-সংক্ষিপ্ত বিষয়মুখী প্রশ্নোত্তর

অভাগীর স্বর্গ-সংক্ষিপ্ত বিষয়মুখী প্রশ্নোত্তর


 

১। 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পটি কোন পত্রিকার কোন সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়?

উত্তর। অভাগীর স্বর্গ’ গল্পটি 'বঙ্গবাণী’ পত্রিকার মাঘ, ১৩২৯ সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়!

২। 'অভাগীর স্বর্গ’ গল্পটি প্রথমে কোন গল্প সংকলনে সংকলিত হয় ? কত সালে সংকলনটির প্রকাশ হয়। 

উত্তর। 'অভাগীর স্বর্গ’ গল্পটি প্রথম 'হরিলক্ষ্মী’ নামের গল্প সংকলনে সংকলিত হয়। সংকলনটির প্রকাশ ১৯২৬ খ্ৰীষ্টাব্দের ১৩ই মার্চ, ‘গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স’ থেকে।

৩। 'অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে চারটি পরিচ্ছেদ? প্রতিটি পরিচ্ছেদের মূল বিষয় নির্দেশ করাে।

উত্তর। 'অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে চারটি পরিচ্ছেদ। প্রথম পরিচ্ছেদে ঠাকুরদাস মুখুয্যের স্ত্রীর সৎকার দর্শনে অভাগীর মুগ্ধ হওয়া। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে অভাগীর জ্বর আসা এবং স্বর্গের যাত্রী হবার বাসনা ছেলের কাছে প্রকাশ করা। তৃতীয় পরিচ্ছেদে বিনা চিকিৎসায় অভাগী মরণাপন্ন হয়ে পড়ল। চতুর্থ পরিচ্ছেদে অভাগীর মৃত্যু এবং তার চিতার কাঠ জোগাড় করতে গিয়ে কাঙালির বিড়ম্বনা।  

৪। “সে যেন একটা উৎসব বাধিয়া গেল।” কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? ’উৎসব বাধিয়া গেল' কেন?

উত্তর। “সে যেন একটা উৎসব বাধিয়া গেল।”—এখানে 'অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে ঠাকুর দাস মুখুয্যের মৃত স্ত্রীর সৎকার প্রসঙ্গে এই উক্তি। বড়লোক মুখুয্যের স্ত্রীর শেষকৃত্যে চার ছেলে, তিন মেয়ে, পুত্রবধূ, জামাতা, নাতি-নাতনি, আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী, চাকরবাকর ইত্যাদির উপস্থিতি এবং সৎকারে নানা অনুষ্ঠানের জন্যই উৎসব মনে হচ্ছিল।   

৫। “আর একটি প্রাণী একটু দূরে থাকিয়া এই দলের সঙ্গী হইল।” প্রাণীটি কে? সে কোন দলের সঙ্গী হল? দূরে থেকে কেন?

উত্তর। “আর একটি প্রাণী একটু দূরে থাকিয়া...”এখানে প্রাণীটি অভাগী। সে শবযাত্রার দলের সঙ্গী হ'ল। নীচ জাত, দুলে বলেই ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে দূরে ছিল।

৬। অভাগীর পরিচয় কী? অল্প কথায় লেখ।

উত্তর। অভাগী হ’ল রসিক বাঘের পরিত্যক্তা স্ত্রী, কাঙালীর মা, বছর তিরিশ বয়সের, নীচুজাতির বধূ।

৭। কাঙালীর মা কোথায় যাওয়া বন্ধ করে শ্মশানে হাজির হয় ? কেন? 

উত্তর। কাঙালীর মা অভাগী হাটে বেগুন বেচতে যাওয়া বন্ধ করে শ্মশানে হাজির হয়। 'সতী লক্ষ্মী’ বধুর গৌরবময় সৎকার দেখবার আগ্রহে।  

৮. অভাগী কার শেষ কৃত্য দেখবার আগ্রহে হাটে যাওয়া বন্ধ করে ?

উত্তর। এখানে ঠাকুর দাস মুখুয্যের সতীলক্ষ্মী স্ত্রীর, স্বামীর আগে, তার মৃত্যু ঘটায় আলতা পায়ে, সিঁদুর পরে চিতায় উঠে ছেলের হাতের আগুনের স্পর্শে গিন্নির স্বর্গে যাওয়া দেখার আগ্রহে অভাগী হাটে যাওয়া বন্ধ করেছিল। 

৯। “অন্তেষ্টি ক্রিয়া প্রথম হইতে শেষ পর্যন্ত উৎসুক আগ্রহে চোখ মেলিয়া দেখিতে লাগিল।”—কে কার অন্তেষ্টি ক্রিয়া দেখিতে লাগিল’?

উত্তর। “অন্তেষ্টি ক্রিয়া প্রথম হইতে শেষ পর্যন্ত”... এখানে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে অভাগী ঠাকুরদাস মুখুয্যের গিন্নির অন্তেষ্টিক্রিয়া উৎসুকভাবে দেখতে লাগল।

১০। “এ সৌভাগ্যের সে যেন আর ইয়ত্তা করিতে পারিল না।”- কে কোন সৌভাগ্যের কথা বলেছে? | 

উত্তর। “এ সৌভাগ্যের সে যেন আর...”এখানে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অভাগী ঠাকুরদাস মুখুয্যের স্ত্রীর সৌভাগ্যের কথা বলেছে। শাখা-সিঁদুর নিয়ে, স্বামীর পায়ের ধুলাে নিয়ে পুত্রবধূ, কন্যা-জামাতা, নাতি-নাতনি, পাড়া-প্রতিবেশীদের সামনে দিয়ে স্বর্গে যাওয়ার সৌভাগ্য। 

১১। অভাগীর নাম অভাগী রেখেছিল কে? কেন?

উত্তর। অভাগীর নাম রেখেছিল তার বাবা। জন্মকালেই তার মা মারা যায়। তাই রাগ করে বাবা এমন নাম রাখে।

১২। অভাগীর স্বামীর নাম কী? সে কোথায় থাকত ?

উত্তর। অভাগীর স্বামীর নাম রসিক বাঘ। সে অন্য স্ত্রীকে নিয়ে অন্য গ্রামে উঠে গিয়ে বাস করত, অভাগীর খবর নিত না।

১৩। অভাগীর ছেলের নাম কী ? তার বয়স কত? সে কিসের কাজ করত।

উত্তর। অভাগীর ছেলের নাম কাঙালী ; সে পনের বছরের কিশাের। সে বেতের কাজ করত। শুধু জলপানির পয়সা পেত।

১৪। “পাঁড়ে, ব্যাটাকে গলাধাক্কা দিয়ে বার করে দেত।”— বক্তা কে? কাকে বের করে দিতে বলেছে? কেন? 

উত্তর। “পাঁড়ে, ব্যাটাকে গলাধাক্কা দিয়ে বার করে দেত!”—এখানে বক্তা হ’ল ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের জমিদারের গােমস্তা অধর রায়। কাঙালীকে বের করে দিতে বলেছে। কারণ, সে নিচু জাতের ছেলে হয়ে আহ্নিকের সময়ে দাওয়ায় উঠেছে এবং বিনা পয়সায় গাছ কাটার আব্দার করে তাকে বিরক্ত করেছে।

১৫। অভাগীর সৎকার কীভাবে হয় ? 

উত্তর। অভাগীর সৎকার তার বাসনা অনুযায়ী হয়নি। নদীর চড়ায় গর্ত করে সেখানে তাকে শােয়ানাে হয়েছে এবং খড়ের নুড়িতে আগুন জ্বেলে কাঙালী তার মুখাগ্নি করেছে।

১৬। অভাগীর শেষ সময়ে কোন দুজন প্রতিবেশী তার কাছে এসেছিল ? 

উত্তর। অভাগীর শেষ সময়ে প্রতিবেশী বিন্দীর পিসি আর রাখালের মা তার কাছে ছিল।।

১৭। মাকে পােড়ানাের কাঠের জন্য কাঙালী কোথায় কোথায় সাহায্য চাইতে গিয়েছিল ? কী পেয়েছিল?

উত্তর। মাকে পােড়ানাের কাঠের জন্য কাঙালী গােমস্তা অধর রায় ও মুখুয্যেবাবুর কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিল। প্রথম স্থানে পেয়েছি গলা ধাক্কা, দ্বিতীয় স্থানে পেয়েছিল বিদ্রুপ।

১৮। “এই মৃত্যু পথ যাত্রী তাহার অবশ বাহুখানি শয্যার বাহিরে বাড়ইয়া হাত পাতিল।”—কে কিসের জন্য হাত পাতল? 

 উত্তর। “এই মৃত্যু পথ যাত্রী তাহার...” মৃত্যু পথ যাত্রী হ’ল অভাগী। সে স্বামী রসিক বাঘের পায়ের ধুলাের জন্য হাত পাতল। . 

 ১৯। “শালা, একি তাের বাপের গাছ আছে যে কাটতে লেগেছিল?”—কে কাকে বলেছে? কেন গাছ কাটতে গিয়েছিল সে?  

উত্তর। “শালা, একি তাের বাপের গাছ.” কথাটা জমিদারের দারােয়ান রসিককে বলেছে। রসিক মৃত স্ত্রী অভাগীর চিতা সাজাবার কাঠের জন্য উঠোনের বেলগাছটা কাটতে গিয়েছিল।

২০। মায়ের চিকিৎসার জন্য কাঙালী কী উদ্যোগ করেছিল? 

উত্তর। মায়ের চিকিৎসার জন্য কাঙালী কবিরাজ বাড়ি গিয়ে কবিরাজের হাতে পায়ে ধরে, কান্নাকাটি করে। শেযে ঘটি বাঁধা দিয়ে একটা টাকা প্রণামী দেয়। কবিরাজ গােটা চারেক বড়ি দেয়। মধু, আদার সত্ত্ব, তুলসীপাতার রস দিয়ে খেতে হবে। অভাগী সে ওষুধ কপালে ঠেকিয়ে উনানে ফেলে দেয়।

 

  

 

  

  

 

 

 

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন